বাচ্চা খারাপ আচরণ করলে কী করব

এ আর্টিকেলে যা থাকছে

খুব ভদ্র বাচ্চাও মাঝেমাঝে ভুল করে বা ইচ্ছা করেই খারাপ আচরণ করে ফেলতে পারে।এর মানে এই না যে আপনার শিশু এভাবেই বড় হবে! বরং শিশুর আচরণগত সমস্যাগুলোর সমাধান করতে এই পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আরো পড়ুন: শিশু জেদ করলে কিভাবে সামলাবো

ধরুন আপনি বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে বেড়াতে এসেছেন। সে হঠাৎই আপনাকে রেগে বলে ফেললো “আমি তোমাকে একদম পছন্দ করিনা! তুমি খুব খারাপ!” কিংবা অপরিচিত কাউকে দেখে মুখ ভেঙচি দিল কিংবা জোরে বলে ফেললো “মা, এই মানুষটা কি কালো!”

এমন ঘটনায় চমকে গিয়ে চারপাশে তাকিয়ে হয়তো ভাবছেন, “অন্য বাচ্চার মা-বাবারাও কি এমন পরিস্থিতিতে পড়ে! নাকি আমার বাচ্চাই এমন বেয়াদব?” 

সত্যি বলতে, হয়তো আপনার চোখে পড়েনি কখনো, কিন্তু আপনার মতো অনেক বাবা-মাই এ ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। 

ইচ্ছা করেই করুক বা ভুলবশত, সব শিশুই কখনো না কখনো খারাপ ব্যবহার করে ফেলে। আপনার মিষ্টি বাচ্চাটার হঠাৎ এমন খারাপ আচরণে আপনাকে হয়তো বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কখনো বেশি খারাপ আচরণে দুঃখও হয়। তবে শিশুদের বিকাশের কথা মাথায় রাখলে বুঝতে পারবেন ওদের এমন আচরণ একেবারেই অস্বাভাবিক না।

বাচ্চার খারাপ আচরণ কার দোষে হয়

এক বা দুই বছর বয়সী শিশু খারাপ, অসম্মানজনক কথা বলে ফেললে যে কোনো বাবা-মাই বেকায়দায় পড়ে যান। বুঝে বলুক বা না বুঝে বলুক, নিজের মিষ্টি বাচ্চাটার মুখ থেকে খারাপ কথা শুনলে বাবা-মায়ের মন খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। এমনকি বাবা-মায়ের এমনও মনে হতে পারে যে তাদেরই কোনো ভুল ছিলো। হয়তো তারা ঠিকঠাক খেয়াল রাখতে পারেনি বা শেখাতে পারেনি। 

শান্ত হোন,  নিজেকে দোষ দেয়ার কিছু নেই – এখানে শিশুর কোনো দোষ নেই, আপনার ওকে সামলানোর পদ্ধতিরও কোনো দোষ নেই। খারাপ আচরণ বা বেয়াদবি করা বা বেয়াদবের মত কথা বলে ফেলা ছোট বাচ্চাদের মধ্যে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এর একটা কারণ হলো শিশুদের কোনো আচরণগত ফিল্টার থাকে না। অর্থাৎ ওরা বড়দের মতো বুঝতে পারেনা কোথায় কী বলতে হবে, বা কী বলা যাবে না। 

আত্মকেন্দ্রিক আচরণ করা বাচ্চার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট‍্য। কারণ এ বয়সে ওরা বুঝতে পারেনা যে ঠিক ওর মতো সবারই অনুভূতি কাজ করে, দুঃখ হয়। 

যখন মনে হয় শিশু ইচ্ছা করেই খারাপ কথা বলছে,এমনকি যদি বাচ্চা খামচি বা কিল-ঘুষিও মারে তখনও নিশ্চিত থাকতে পারেন যে সে আসলে কতটুকু বাজে ব‍্যবহার করছে তা সম্পর্কে ওর ধারণা নেই।  

চিন্তার কোনো কারণ নেই, বাচ্চা সবসময় এমন থাকবে না। এখন মাঝেমাঝে খারাপ আচরণ করলেও এমন না যে সে সারাজীবন অন্যদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে বেড়াবে। দয়া, সহমর্মিতা মানুষ সামাজিকভাবে শেখে। আর বড় হতে হতে আপনার শিশু তার চারপাশে নম্রতা, ভদ্রতা, দয়া ও সহমর্মিতা দেখতে পেলে সেও ধীরে ধীরে শিখে নেবে। এই ভালো আচরণ শেখার শুরু হয় পরিবার থেকেই।

 

বাচ্চার খারাপ আচরণ সামলানোর উপায়

অন্য কেউ কষ্ট পেতে পারে এটা মাথায় রেখে ভেবেচিন্তে কথা বলার মতো বয়স আপনার শিশুর হয়নি৷ কিন্তু এই বয়স থেকেই আপনি বাচ্চাকে ভালো আচরণ, আদব কায়দা শেখাতে পারেন। শিশুকে দয়া, সহমর্মিতা শেখানে চান? আপনি নিজে সহানুভূতিশীল আচরণ করুন আর শিশু ভালো ব্যবহার করলে তার প্রশংসা করুন। 

নিজে নম্র, সহানুভূতিশীল কথা বলুন।  আপনার শিশু যখন দেখবে আপনি এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা একে অপরের সাথে নম্র আচরণ করছেন, সে নিজেও ঠিক তেমনভাবেই কথা বলবে। কথা বলার সময় “ধন্যবাদ”, “প্লিজ” এসব সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করুন। অন্যদের কাছে অনুভূতি জানতে চান। কারো সাথে দেখা হলে ভদ্রভাবে সালাম/নমস্কার জানান। যাওয়ার সময় সুন্দরভাবে বিদায় দিন। বাচ্চার সামনে খারাপ শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। যদি ভুলবশত আপনি শিশুর সামনে কোনো অপ্রীতিকর শব্দ বলে ফেলেন বা খারাপ আচরণ করে ফেলেন, অবশ্যই সামনের মানুষের কাছে নিজের  ব্যবহারের জন্য নম্রভাবে ক্ষমা চেয়ে নিন।

আপনি যখন ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলেন শিশু কিন্তু সেগুলিও খুব মন দিয়ে শোনে। ফোনে অন‍্যের সম্পর্কে বাজে কথা বা খারাপ শব্দ বলা থেকে বিরত থাকুন। 

পুতুল খেলার মাধ‍্যমে শেখান সব বাচ্চাই খুব ছোটবেলা থেকে পুতুল খেলে। প্রতিদিন ওর প্রিয় পুতুলকে আদর করা, ব্রাশ করানো, কুশল বিনিময় করা (কেমন আছো, কী খেয়েছো, আজকে কেমন লাগছে) শেখান। আপনি পুতুলের সাথে যেভাবে কথা বলবেন এবং যেসব কথা বলবেন সেও অন‍্যের সাথে এমন ব‍্যবহার করা শিখবে। পুতুল দিয়ে মারামারি, পুতুলের চুল টানাটানি কিংবা ঝগড়া করা শেখাবেন না। 

আরো পড়ুন: কাঁথা দিয়ে শিশুর ৫টি খেলা

শিশুর সময়কে সম্মান করুন। বাচ্চার সাথে সময় কাটানো খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি যখন ওর সাথে খেলছেন বা পড়ছেন তখন ফোন আসলে ধরবেন না। বা খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু না হলে সেটা পরে করার জন‍্য রেখে দিন। যখন শিশুকে সময় দিচ্ছেন, তখন যদি একান্তই তাকে গুরুত্ব দেন তাহলে সেও অন‍্যের সময়কে গুরুত্ব দিতে শিখবে। 

এ লেখাটি লেখার সময় এমিল কমপক্ষে ১৫ বার আমার মনোযোগ চেয়েছে। খেলার জন‍্য, খাওয়ার জন‍্য এবং কোনো কারণ ছাড়াই মনোযোগ আকর্ষণের জন‍্য। প্রতিবারই ওকে সময় দিয়েছি। দেরি হলেও এমিল যখন ঘুমায় বা বাবা/দাদীর সাথে খেলায় ব‍্যস্ত থাকে তখনই আমি আমার কাজগুলি করার চেষ্টা করি। 

শিশু ভালো আচরণ করলে প্রশংসা করুন। শিশু সহানুভূতিশীল আচরণ করলে ব্যাপারটাকে অবহেলা করবেন না। বাচ্চা যদি কারো সাথে ভালো ব্যবহার করে, তাহলে তাকে খুব প্রশংসা করুন। ওকে দেখিয়ে দিন বা মুখে বলুন যে তার সুন্দর ব্যবহার সামনের মানুষটার খুব ভালো লেগেছে। 

শিশুর সাথে খারাপ ব্যবহার না করে বুঝিয়ে বলুন। বাচ্চা কষ্ট দিয়ে কথা বললে তাকে তা জানিয়ে দিতে সমস্যা নেই। তবে অবশ্যই বুঝিয়ে বলতে হবে।  যেমন, “তুমি একটা বেয়াদব মেয়ে!” না বলে বলুন “তুমি যখন বলো ‘আম্মু তুমি খুব খারাপ, আমি তোমাকে একদম পছন্দ করিনা’ তখন আমার খুব মন খারাপ হয়”। 

অন্যরা কথা বলার সময় কথার মাঝখানে বাধা দেয়া থেকে বিরত থাকুন। বাচ্চার সামনে অন্যদের প্রতি সম্মান দেখালে, অন্যদের কথা মন দিয়ে শুনলে সেও ধীরে ধীরে আপনাকে দেখে শিখে নেবে৷ 

কিছু কিছু ব্যবহার এড়িয়ে যান। ধরুন আপনার শিশুর কোনো আচরণ একটু বিরক্তিকর লাগছে, কিন্তু সেটা তেমন বড় কিছু না, তাহলে সবচেয়ে ভালো কাজ হবে ব্যাপারটা পুরোপুরি এড়িয়ে যাওয়া। কারণ ছোটখাটো ব্যাপারগুলোয় আপনি উত্তেজিত হয়ে পড়লে এটা ওর মনে থাকবে। শিশু আপনার মনোযোগ পাওয়ার জন্য বারবার ঐ একই আচরণ করতে থাকবে। তাই শিশুকে কোন বিষয়ে অতিরিক্ত পাত্তা দিচ্ছেন সেটা খেয়াল করবেন। হিতে বিপরীত হতে পারে।

কিছু আচরণগত সীমা ঠিক করুন এবং তা মেনে চলুন। কিছু ছোট ব্যাপার যেমন এড়িয়ে যাওয়াটাই ভালো, অন্যদিকে আপনার শিশুর কোনো কথা বা ব্যবহার যদি একদমই মেনে নেওয়ার মতো না হয় তাহলে অবশ্যই তাকে সরাসরি এ ব্যাপারে বলুন। এমন ব্যবহার করলে কোনো উপযুক্ত পরিণাম চিন্তা করে রাখুন। যেমন- বাচ্চা যদি তার ভাইকে মারে বা বলে “তুমি বাজে” তাহলে খেলা বন্ধ করে দেয়া যেতে পারে। 

শান্ত থাকুন। আপনি বিরক্তবোধ করলেও রেগে গিয়ে খারাপ আচরণ করে ফেলবেন না।  বাচ্চা এতে করে আপনার কাছ থেকে দেখে শিখবে। আপনি শান্ত থাকলে সেও একসময় শান্ত থাকা শিখে যাবে। কোনো কারণে বিরক্ত হয়ে আপনি যদি খারাপ আচরণ করেন, তাহলে শিশু ভয় পেয়ে যেতে পারে এবং বিরক্ত হলে যে খারাপ আচরণ করতে হয় না, এ শিক্ষাটা তার মাথায় নাও ঢুকতে পারে।  

হুমকি দেয়া থেকে বিরত থাকুন। “এক্ষুনি থামো না হলে কিন্তু–” এ ধরনের হুমকি সাধারণত খুব একটা কাজে দেয়না। বরং, শিশুর মনে আপনার সাথে একধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এসব কথায় শিশু আরো বেশি উৎসাহ পায়। তাই হুমকি না দেয়াই ভালো।  

মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন। শিশুর কোনো খারাপ আচরণের উত্তরে হুমকি না দিয়ে বরং তার চিন্তা অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন। যেমন, বাজারে সবার সামনে বাচ্চা অপ্রীতিকর কোনো বিষয় নিয়ে জোরে জোরে কথা বললে, তাকে কোনো মজার গল্প বলে তার মন ওই বিষয় থেকে সরানো যেতে পারে।

এমিল যখন পিয়ানোর ওপর উঠে নাচতে থাকে, আমি তখন একটা প্লাস্টিক বিছিয়ে ওটার উপরে লাফাই। প্লাস্টিকে আওয়াজও হয়, আবার এটা অনিরাপদ কিছুও নয়।

শিশুর খাবার আর ঘুম খেয়াল করুন। শিশুরা সাধারণত ক্ষুধা পেলে বা ক্লান্ত হলে বিরক্তবোধ করে। এসময় ছোটখাটো বিষয়ে ফেটে পড়ে খারাপ ব্যবহার করে ফেলা স্বাভাবিক। তাই বাচ্চা যেন নিয়মিত, ঠিক সময়ে খাবার খায় এ ব্যাপারটা দেখতে হবে। সময়ে সময়ে মজার কোনো নাস্তাও দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া শিশুর ভালো ঘুম নিশ্চিত করা খুব জরুরি।

বাচ্চা খারাপ আচরণ করলে কি তাকে শাস্তি দেয়া উচিত

শাস্তি নয়, পরিণাম বোঝান। খারাপ আচরণের জন্য উপযুক্ত পরিণাম দেখলে আপনার শিশু বুঝতে পারবে তার কোন আচরণটা খারাপ, বা মেনে নেয়া হবেনা। কিন্তু বাচ্চাকে এটা উপলব্ধি করাতে হলে অবশ্যই তাকে তার বয়স অনুযায়ী আচরণ করতে হবে এবং সঠিক সময়ে করতে হবে। 

যেমন ধরুন সকালের নাস্তা করতে বসে কাউকে গাধা বলে ফেলার জন্য যদি তাকে পরিণাম হিসেবে যে রাতে প্রিয় কার্টুন দেখতে না দেয়া হয়, তাহলে বাচ্চা কারণ আর পরিণামের সম্পর্কটা ধরতে পারবে না।বরং বুঝতে না পেরে তার প্রিয় কার্টুন দেখতে না পারায় বিরক্ত হবে। 

খারাপ কথা বলে ফেলা অথবা খারাপ আচরণের কারণে শিশুকে যেভাবে বোঝাবেন যে তার আচরণটি ভালো না–

  • আচরণের উপযুক্ত পরিণাম দিন এবং শিশু খারাপ আচরণ করে ফেলার সাথে সাথেই সেটা করুন

বাচ্চা যদি মাঠে খেলতে গিয়ে আপনাকে বলে “তুমি খুব খারাপ, আমি তোমাকে পছন্দ করি না” তাহলে তখনই তাকে মাঠ থেকে বাসায় নিয়ে চলে আসুন। সাথে সাথে যথাযথ শাস্তি পেয়ে শিশু তার আচরণ আর আচরণের শাস্তির ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। 

  • কিছু সময়ের জন্য তাকে পছন্দের কিছু করতে বাধা দিন। 

বাচ্চা অপ্রীতিকর বা খারাপ কিছু করলে তাকে শাস্তিস্বরূপ কিছুক্ষণের জন্য সে যা করছে তাতে বাধা দিন।  এই বিরতি পেলে হয়তো শিশু চিন্তা করে বুঝতে পারবে তার আচরণটা ঠিক হয়নি। 

তবে দুই বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রেই এই পদ্ধতি উপযুক্ত।  কারণ এর চেয়ে ছোট বাচ্চারা সাধারণত একজায়গায় স্থির থাকতে পারেনা, তাই তাদেরকে এই শাস্তি দিলেও তারা বুঝে উঠতে পারবেনা কেন দেয়া হচ্ছে। 

  • শিশুকে তার খারাপ ব্যবহারের কথা নির্দিষ্ট করে বলে, পরিণতির ব্যাপারে সাবধান করুন

আপনি যদি লক্ষ্য করেন বাচ্চা খারাপ ভাষা ব্যবহার করছে  অথবা তার গলা উঁচিয়ে বেয়াদবির স্বরে কথা বলা বেড়ে যাচ্ছে তাহলে তাকে স্পষ্ট করে বলুন এমন করতে থাকলে কি হবে। যেমন আপনি বলতে পারেন “তোমার ভাইয়াকে আবার গাধা বললে কিন্তু বাথটাবে পানি নিয়ে খেলতে দেবোনা”

  • আদরের সাথে শাসন করুন 

আপনার বাচ্চাকে বুঝিয়ে বলুন তার কোনো আচরণের কারণে শাস্তি দিতে হলেও আপনি তাকে ভালোবাসেন। যেমন, “আমি তোমাকে ভালোবাসি আম্মু, কিন্তু তবুও তুমি কারো সাথে এভাবে কথা বলতে পারোনা”। শিশুর কাজের শাস্তিস্বরূপ শিশুকে আদর না করা, কিংবা খারাপ কথা বলার জন্য শিশুকে গালি দেওয়া বা তাকে ‘খারাপ’ বলে সমালোচনা করা একেবারেই উচিত নয়।

  • কোনো আচরণ কেন খারাপ তা বুঝিয়ে বলুন 

বাচ্চাকে সহজে আর সংক্ষেপে বুঝিয়ে বলুন যে কেন কারো জামা-কাপড় বা সে কেমন দেখতে তা নিয়ে খারাপ মন্তব্য করা, বা কাউকে  বিদ্রুপ করা, গালি দেওয়া অভদ্রতা এবং মোটেই ভালো কাজ নয়।  শিশুকে বুঝিয়ে বলুন,এগুলো করলে মানুষের মন খারাপ হয়। এতে বাচ্চা বুঝতে পারে যে তার খারাপ কথা অন্যদের মনে কষ্ট দিতে পারে। 

  • নিয়মিত বাচ্চাকে বোঝান 

শিশুকে একবার, দুইবার বুঝিয়ে বলা এবং শাস্তি দেওয়া হয়তো তাকে পুরোপুরি বোঝাতে যথেষ্ট হয় না যে অসম্মানজনক বা খারাপ আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। । তাই তাকে নিয়মিত বুঝিয়ে বলতে হবে।

  • কখনোই শারীরিক শাস্তি দেবেন না 

কখনোই শিশুকে শাস্তি দিতে গিয়ে মারবেন না, ঝাঁকুনি দেবেন না,শারীরিকভাবে ব্যথা দেবেন না। শাস্তি দিতে গিয়ে বাচ্চাকে হুমকি-ধামকি দেওয়া, অপমান করা থেকেও বিরক্ত থাকুন। কারণ এ ধরণের শাস্তি দিলে আচরণগত সমস্যা না কমে বরং শিশু আরো বেয়াড়া হয়ে উঠতে পারে। 

আপনার ছোট্ট বাচ্চাটার মুখে খারাপ কথা শুনলে বিরক্ত হওয়া খুব স্বাভাবিক। এমনকি মাঝেমাঝে আপনার  হয়তো খুব মন খারাপও হয়। কিন্তু পরেরবার যখন আপনার মিষ্টি বাচ্চাটা অসম্মানজনক কিছু বলে ফেলবে, এটা মনে রাখবেন ওর বয়সে আসলে এমন করাটাই স্বাভাবিক। আপনি নিজেই ওর জন্য ভালো ব্যবহারের একটা উদাহরণ হয়ে ওকে একজন সহানুভূতিশীল, নম্রভাষী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষমতা রাখেন।

 

 

 

রেফারেন্স

  1. American Academy of Pediatrics, 10 Tips to Prevent Aggressive Toddler Behavior, June 2021. 
  2. American Academy of Pediatrics, How to Give a Time-Out, November 2018. 
  3. American Academy of Pediatrics, How to Shape & Manage Your Young Child’s Behavior, October 2018. 
  4. American Academy of Pediatrics, Potty Talk: How Parents Can Discourage the Behavior, January 2014. 
  5. American Academy of Pediatrics, What’s the Best Way to Discipline My Child? November 2018. 
  6. Harvard Graduate School of Education, 5 Tips for Cultivating Empathy  March 2021. 

Comments (02)

  1. Farhna
    April 28, 2024

    Amar meyer age 12+, sob kicu e ogucalo kore rakhe. Khub jid kore, Kono Kotha sunena, amak khub osomman kore Kotha bole, mukhe mukhe torko kore, Valo Kotha k se Kono na Kono vaba negatively nibae. Ami ki Korte pari , poramorso dila upokrito hotam.

    Reply
    • April 29, 2024

      এ বয়সটাই এমন। আপনাকে অনেক কৌশলী হতে হবে। এক নম্বর বিষয় হলো ও ভালো আচরণ না করলে আপনি ওকে বেশি পাত্তা দিবেন না। রুম গুছিয়ে দিবেন না। না গোছালে ওভাবেই থাকবে। আপনি সতর্কভাবে কথা বলবেন। সবকিছুতে উত্তর করবেন না। এবং চয়েস দিবেন না। যেমন বলবেন না, গোসল করো নি কেন?বলবেন, গোসল কর। শক্তভাবে চোখ চোখ রেখে বলবেন।

      Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *