গরমে বাচ্চার যত্ন

এ আর্টিকেলে যা থাকছে

গরমে নিজেরই যখন হাঁসফাঁস অবস্থা তখন প্রচণ্ড গরমে বাচ্চার যত্ন ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা, শরীর ঠিক আছে কিনা এসব নিয়ে বাবা মায়ের দুশ্চিন্তার শেষ থাকে না। কিছু সাধারণ বিষয় জানা থাকলে প্রচণ্ড গরমে বাচ্চার যত্নে আপনার কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।

গরমে বাচ্চার যত্নে যা জানা দরকার

প্রচণ্ড গরমের সময় নবজাতক এবং ছোট বাচ্চাদের কিভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়, কী করলে ঘামাচি উঠবে না এবং কিভাবে বাচ্চাকে ডিহাইড্রেশন বা পানিশুন‍্যতা থেকে রক্ষা করা যায় এ নিয়ে এখানে বিস্তারিত আলোচনা করা হল।

কতটা গরমে বাচ্চাকে বাইরে নেওয়া যাবে না

আমেরিকান শিশু অ্যাকাডেমির (AAP) মতে, আবহাওয়া শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ না হলে সব বয়সী বাচ্চাই বাইরে খেলাধুলা করতে পারবে এবং খেলা উচিতও। আমেরিকার জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (National Weather Service) তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর নিচে থাকলে ‘ঝুঁকিহীন আবহাওয়া’ বলে মনে করে।

তবে তাপমাত্রা যদি ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা এর উপরে থাকলে আমেরিকাতে সেটা “ঝুঁকিপূর্ণ”। এসময় নবজাতক, ছোট বাচ্চা বা হাঁটতে পারে এমন শিশু কারোরই দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে থাকা উচিত নয়।

গরমে বাচ্চার বাইরে যেতে হলে গরম থেকে বাঁচাতে কী করণীয়

সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে বেশি প্রখর থাকে। তাই আমেরিকান শিশু অ্যাকডেমির (AAP) মতে, শিশুর জন্য দিনের পরিকল্পনা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন এই সময়ের মধ্যে শিশু যতটা সম্ভব কম সময় রোদে থাকে। নবজাতকের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা বেশি জরুরি কারণ নবজাতকের শরীরে ঘাম হয় না ফলে বড়দের শরীর যেমন ঘামের মাধ্যমে শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা ঠাণ্ডা রাখে সেটা নবজাতকদের ক্ষেত্রে হয় না।

১০টা থেকে ৪ টা খুবই দীর্ঘ একটা সময়। তাই এই সময়ের মধ্যে যদি বাচ্চাকে নিয়ে বাইরে থাকতে হয় তবে যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে ছায়া যুক্ত জায়গায় থাকার। তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি হলে ঘরের ভেতর থাকার চেষ্টা করতে হবে।

বাচ্চাকে গরমকালের তীব্র গরমের সাথে অভ্যস্ত করতে ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেমন গরমে বাচ্চার বাইরে থাকার সময়সীমা ধীরে ধীরে বাড়াতে পারেন এবং প্রতি ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পরপর বিরতি দিতে পারেন। তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর বেশি হলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের কম হলেও বাতাসে যদি আর্দ্রতা বেশি (৭০%) থাকে তাহলেও সতর্ক থাকতে হবে।আদ্রর্তার কারণে গরম বেশি অনুভূত হয় এবং অতিরিক্ত ঘাম হয়।

  • বাচ্চাকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাওয়াতে হবে।
  • ছয় মাসের কম বয়সী বাচ্চাকে বুকের দুধ অথবা ফরমুলা দুধ 
  • ছয় মাসের বেশি বয়সী বাচ্চাকে কয়েক চুমুক পানি, বুকের দুধ বা ফরমুলা খাওয়াতে হবে।

বাইরে বের হওয়ার সময় নিজের জন্য এবং সাথে যদি কেউ থাকে তার জন্যও প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি সাথে নিতে হবে।

পর্যাপ্ত সতর্কতা এবং ব্যবস্থা নেয়ার পরও যদি মনের মধ্যে অস্বস্তি বা সন্দেহ থেকে যায় তবে তা গুরুত্বের সাথে নিন। আপনার যদি অনেক বেশি গরম লাগে, ঘাম হয় এবং অস্বস্তিবোধ করেন তাহলে শিশুরও এমন লাগার আশঙ্কাই বেশি। তাই এরকম সময়ে ঠাণ্ডা বা ছায়া যুক্ত কোনো জায়গায় ফিরে গিয়ে বিশ্রাম নেওয়াই ভালো। কিন্তু আপনি যদি বাইরের পরিবেশে স্বাভাবিক ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তবে শিশুরও একইরকম লাগার কথা।

বিশেষত নবজাতকের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য কারণ তারা বড় বাচ্চা বা টডলারদের তুলনায় কম নড়াচড়া বা খেলাধুলা করে।

গরমে বাচ্চার ঘামাচি রোধে কী করা যায়

ঘামাচি হয় ঘাম থেকে। ঘামাচি রোধের জন‍্য একটাই কাজ করতে হবে। সেটা হলো বাচ্চা যেন না ঘামে বা কম ঘামে সে ব‍্যবস্থা করা।

ঘাম সুস্থতার লক্ষণ। ঘামের মাধ‍্যমে শরীর অপ্রয়োজনীয় বর্জ‍্য বের করে দেয়। কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম পানিশুন‍্যতার কারণ হতে পারে।

বাচ্চার যাতে ঘামাচি না হয় সেজন‍্য–

গরমে বারবার গোসল দিন। শরীর মুছে দিন। শিশু ঘুমের মধ‍্যে ঘামলে তার মাথা সুতির কাপড় দিয়ে মুছে দিন। ঘাম থেকে শিশুর অসুখ হতে পারে। 

বাচ্চাকে বাতাস চলাচল করে এমন জায়গায় রাখুন। ফ‍্যানের নিচে বা জানালার পাশে যেখানে গরম কম লাগতে পারে সেখানে রাখুন। ঘাম মুছে ফেলা ছাড়া ঘামাচির আর কোনো ওষুধ নেই।  

গরমে বাচ্চার শরীরে পাউডার ব‍্যবহার করা একদমই ঠিক না। কারণ এতে ত্বকের ওপর আলগা আস্তরণ পড়ে ঘাম ঠিকমত বের হতে পারে না। এ কারণে ঘামাচি ও অন‍্য ব‍্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে। গরমের সবচেয়ে ভালো প্রসাধনী হলো আকুয়া বা পানি বেইজড লোশন। তেল ও অয়েলি লোশন/পেট্রোলিয়াম জেলি জাতীয় জিনিস এ সময় এড়িয়ে চলাই ভালো।

আরো পড়ুন: শিশুর শরীরে তেল মালিশ কি ঠিক?
গরমে বাচ্চাকে গরম পানি দিয়ে গোসল করানো যাবে

নবজাতক শিশুকে অবশ‍্যই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।এমনকি বড় শিশুদেরও কুসুম গরম পানিতেই গোসল করা ভালো। তারপরেও আপনার বাথরুম এবং ঘরের গরমের ওপরে নির্ভর করে পানি কতটা গরম করবেন। 

বাচ্চার মাথা ও শরীরে একই তাপমাত্রার পানি ব‍্যবহার করবেন। একটা ঠাণ্ডা, একটা গরম হলে শরীর ভারসাম‍্য রক্ষা করতে পারে না। 

৬ মাস+ বয়সী বাচ্চাকে দিনে যত খুশি গোসল করাতে পারেন। তবে মাথা বা চুল যেন ভালো করে মোছা হয়। নাহলে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে।

স্ট্রলারে বাচ্চাকে গরম থেকে কিভাবে সুরক্ষা দেওয়া যায়

শিশুর জন্য স্ট্রলার বা কার-সিট ব্যবহার করলে, বড় ক্যানোপি বা ছাউনি আছে এমন স্ট্রলার বেছে নিন। ক্যানোপি বা ছাউনি শিশুর নরম ত্বককে সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করবে। ক্যানোপি বা ছাউনি আরো লম্বা করা সম্ভব হলে বাচ্চার পা থেকে মাথা পর্যন্ত পুরোটাতেই ছায়া দেওয়া সম্ভব। 

গাড়ির সিট বা স্ট্রলারে বাচ্চাকে ঢাকার জন্য কাঁথা বা চাদর জাতীয় কিছু  ব্যবহার করা যাবে না। কাঁথা বা চাদর বাতাস চলাচলের উপযোগী কাপড় দিয়ে তৈরি হলেও তা ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এতে বাচ্চার বদ্ধ লাগার সম্ভাবনা থাকে,এবং নির্বিঘ্নে বাতাস চলাচল করতে পারেনা বলে ভেতরের উত্তাপও বেড়ে যেতে পারে। এছাড়াও ওপরে চাদর দিয়ে দিলে বাচ্চার যদি কোনো অসুবিধা হয় তাও বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবেনা।

গরমে বাচ্চার জামাকাপড় কেমন হবে

গরমের দিনে বাচ্চাকে পোশাক পরানোর ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলো অনুসরণ করা যায়: 

  • গরমের সময় বাচ্চাকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জামাকাপড় পরানো থেকে বিরত থাকুন। শিশুকে সূর্যের সরাসরি রোদ থেকে দূরে রাখা সম্ভব হলে, হালকা রঙের, ছোট হাতার একটা জামাই এই সময়ে শিশুকে পরানোর জন্য সবচেয়ে উপযোগী। 
  • হালকা রঙের এবং হালকা ওজনের কাপড় ব্যবহার করতে হবে। যদি ছয় মাসের কম বয়সী শিশুকে সূর্যের সরাসরি আলো থেকে দূরে রাখা সম্ভব না হয় তবে সেক্ষেত্রে শিশুকে পাতলা লম্বা প্যান্ট ও হালকা বড় হাতার শার্ট পরাতে হবে। ছয় মাস এবং তার বেশি বয়সী শিশুর জন্য পাতলা ছোট প্যান্ট ও হাওয়া চলাচল করতে পারে এমন কাপড় যেমন সুতির জামা ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো। 
  • বাচ্চার মাথায় ব্রিমড হ্যাট বা বারান্দাওয়ালা টুপি পরানো যায় (শিশু যদি পরতে রাজি হয় তো!) এতে মুখমণ্ডল এবং ঘাড় রোদ থেকে কিছুটা সুরক্ষিত থাকবে। বিশেষ করে নবজাতক শিশু বা ছোট বাচ্চা যাদের মাথায় চুল নেই,তাদের জন্য টুপি ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
  • রোদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিশেষভাবে তৈরি কিছু পোশাক বাজারে পাওয়া যায়, সেগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সুইম শার্ট।
বাচ্চাকে কোন ধরনের সানস্ক্রিন দেয়া যাবে

শিশু গরমের মধ্যে স্বস্তিতে আছে কি না সেটা নিশ্চিত করা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, শিশুর নরম ত্বককে তাপ থেকে রক্ষা করা ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রোদের সংস্পর্শে আসা অরক্ষিত চামড়া বা ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় লাগে।

ছোট বাচ্চাদের শরীরে সানস্ক্রিন (এক ধরনের ক্রিম যা রোদ থেকে বাঁচায়) ব্যবহারের কিছু পরামর্শ :

  • বাচ্চার বয়স যদি ছয় মাসের কম হয় এবং বাইরে থাকা অবস্থায় যদি ছায়া পাওয়ার বা প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড়ের ব্যবস্থা না থাকে তবে, শরীরের যেসব অংশ খোলা থাকে যেমন মুখমণ্ডলে (নাক,গাল এবং কান),হাতে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে সানস্ক্রিন এর SPF হতে হবে ৩০ থেকে ৫০। ( SPF বলতে সানস্ক্রিন এর সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষমতা বোঝায়। SPF যত বেশি সুরক্ষা ততো বেশি) 
  • নবজাতক ও ছোট শিশুদের উপযোগী সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে যেগুলোয় জিংক অক্সাইড এবং টাইটেনিয়াম অক্সাইড থাকে। এসব মিনারেল উপাদান চামড়ার ওপরে থেকে যায়, অন্যান্য উপাদানের মত এগুলো চামড়ার ভেতরে চলে যায়না। শিশুদের সংবেদনশীল চামড়ার জন্য এই সানস্ক্রিন খুবই উপযোগী। 

 

গরমে বাচ্চার যত্নে আমেরিকার প্রসাধনী কিনতে ক্লিক করুন ছবিতে
  • রোদে যাওয়ার ৩০ মিনিট আগে শিশুর ত্বকে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর পর আবার লাগিয়ে দিতে হবে । ছয় মাস বা এর বেশি বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে, বাইরে যাওয়ার আগে ৩০ থেকে ৫০ SPF এর সানস্ক্রিন লাগাতে হবে এবং প্রতি দুই ঘন্টা পরপর আবার লাগাতে হবে। কিছুটা মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে কারণ এসব দিনে সূর্যকে যতটা মলিন দেখায়, সূর্যের তেজ তার চেয়ে বেশি থাকে। ছয় মাসের কম বয়সী শিশুর জন্যও সানস্ক্রিন লাগানোর ক্ষেত্রে একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে, কিন্তু ্তাদের ক্ষেত্রে শরীরের ছোট অংশে পরিমাণে কম সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে সরাসরি সূর্যের আলোর নিচে বা গরমের মধ্যে কম সময় থাকতে। 
  • শিশুর চোখের আশপাশে সানস্ক্রিন লাগানোর সময় বেশি সতর্ক থাকতে হবে।বাচ্চা যদি বেশি নড়াচড়া করে তবে সানস্ক্রিন লাগানোর জন্য সে শান্ত হওয়ার পর্যন্ত অপেক্ষা করুন বা কোনো খেলনা দিয়ে তার মনোযোগ অন্য দিকে ঘোরাতে অন্য কারো সাহায্য নিন। কোনোভাবে ছোট্ট বাবু যদি সানস্ক্রিন চোখে লাগিয়ে ফেলে তবে ঠাণ্ডা ভেজাভেজা কাপড় দিয়ে আলতো করে তার হাত ও চোখ মুছে ফেলতে হবে।
নবজাতকের শরীর অতিরিক্ত উত্তপ্ত হওয়ার লক্ষণ

যেহেতু ছোট শিশুরা তাদের অস্বস্তি বা সমস্যার কথা নিজে থেকে বলতে পারেনা, তাই অতিরিক্ত গরম থেকে ক্লান্তি বা শিশুর শরীরে অন্যান্য অতি উত্তাপের লক্ষণগুলো খুব সতর্কতার সাথে খেয়াল করতে হবে।সতর্কতামূলক কিছু লক্ষণ হলো শিশুর শরীর স্পর্শ করলে অতিরিক্ত গরম অনুভূত হওয়া, শিশুর পেট স্বাভাবিক সময়ের থেকে বেশি গরম লাগা,অতিরিক্ত পিপাসা লাগা,ঘেমে যাওয়া, ক্লান্ত ও দুর্বল আচরণ করা,আর শরীরে শক্তি কমে যাওয়া।
ঘুমের সময় হয়ে যাওয়ার কারণে,কিংবা সকাল থেকে বেশি বেশি খেলাধুলা করার কারণেও শিশু ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে।কিন্তু আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন শিশুকে স্বাভাবিকের থেকে বেশি দু্র্বল মনে হচ্ছে কিনা। যদি শিশু অতিরিক্ত গরমের কারণে ক্লান্তি বোধ করে তবে খুব দ্রুত তাকে ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে জামাকাপড় খুলে দিতে হবে যাতে তাপ সহজে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। একটা কাপড় ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে বারবার শিশুর শরীর মুছে দিতে হবে (অতিরিক্ত ঠাণ্ডা ব্যবহার করা যাবে না,এতে ঠাণ্ডায় কাঁপুনি শুরু হতে পারে)
একটু বড় শিশুকে একটু পর পর মুখে পানি অথবা বুকের দুধ দিতে হবে এবং ছয় মাসের কম বয়সী শিশুকে বুকের দুধ বা ফরমুলা দিতে হবে। লক্ষণ যদি খারাপের দিকে যায় বা বেশি গুরুতর মনে হয় তবে দ্রুত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

গরমে বাচ্চার পানিশূন্যতা রোধের উপায়

গ্রীষ্মে সাধারণত আমরা পানির বোতল সাথে রাখি, সেরকম ভাবেই বাচ্চার জন্য সবসময় বোতলে পানি বা তার উপযোগী তরল/পানীয় প্রস্তুত রাখতে হবে।

ছয় মাসের কম বয়সী নবজাতককে নিয়মিত কিছুক্ষণ পরপর বুকের দুধ বা ফরমুলা দিতে হবে এবং একটু বড় বাচ্চাদের( বিশেষত ৪ থেকে ৬ মাস বয়সী বাচ্চা যারা সলিড খেতে শুরু করেছে) গরমের সময় দুধের পাশাপাশি কয়েক চুমুক পানিও খেতে দেওয়া যায়। 

কোন বয়সী বাচ্চার কতটুকু পানি দরকার

আপনি যেখানে থাকেন সেখানকার আবহাওয়া যদি তুলনামূলক বেশি গরম হয়, এবং যদি মনে হয় যে বাচ্চার স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তরল খাওয়া প্রয়োজন,তবে এ ব্যাপারে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তার কাছ থেকে জেনে নিতে হবে শরীর থেকে যেসব ভিটামিন বের হয়ে গেছে তা পানিশূন্যতা কাটানোর কোনো তরল (যেমন পেডিয়ালাইট বা স‍্যালাইন) খাইয়ে পূরণ করা যাবে কিনা। বাচ্চা পানিশূন্যতায় ভুগছে কিনা তা বাচ্চার প্রস্রাবের পরিমাণ বা ডায়পার কতবার ভেজাচ্ছে তা লক্ষ্য করেই আন্দাজ করা যায়। গরমে বাচ্চার যদি দৈনিক চারটার কম ডায়পার প্রয়োজন হয় তবে তরল খাওয়ানোর পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে।
পানিশুন‍্যতার আরো যেসব লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে:

  • মুখ শুকিয়ে যাওয়া 
  • কান্না করলে চোখে পানির পরিমাণ কম হওয়া
  • শক্তি কম এবং খেলাধুলায় অনাগ্রহ

বাচ্চার মধ্যে যদি পানিশুন্যতার লক্ষণ দেখা দেয় তবে ডাক্তার দেখানো সবচেয়ে ভালো। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পানিশুন্যতা কাটানোর জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি এবং তরল খাওয়ার পরামর্শ দেবে।
যদি বাচ্চার মধ্যে অতিরিক্ত পানিশূন্যতার গুরুতর লক্ষণ দেখা দেয় ( মাথার নরম অংশ গোল হয়ে দেবে যাওয়া বা নরম হয়ে যাওয়া) তবে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।



References

  1. American Academy of Pediatrics, Extreme Heat: Keeping Kids Safe When Temperatures Soar 
  2. American Academy of Pediatrics, Sun Safety and Protection Tips 
  3. American Academy of Pediatrics, Signs of Dehydration in Infants & Children 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *