বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্য কেন হয়, কী করণীয়

এ আর্টিকেলে যা থাকছে

বাচ্চার পায়খানা নিয়মিত হওয়া সুস্বাস্থ‍্যের লক্ষণ। পায়খানা না হওয়া বা শক্ত/কষা হওয়াকে এক কথায় আমরা বলি কোষ্ঠকাঠিন‍্য। কোষ্ঠকাঠিন‍্য একদম নবজাতক থেকে শুরু করে সব বয়েসী বাচ্চাদের মধ‍্যেও খুব সাধারণ ঘটনা। কিভাবে এ সমস‍্যা দূর করা যায় তা নিয়ে এ আর্টিকেল।

বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্য হলে খাবারের ধরণ বদলাতে হবে
বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্য হলে খাবারের ধরণ বদলাতে হবে

এ লেখাটি দুই বয়েসী বাচ্চার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। প্রথম অংশ শিশু বা ১২ মাসের কম বয়েসী শিশুর জন্য। এ বয়েসী বাচ্চাদের মূল খাবার বা ফরমুলা। লেখার প্রথম অংশে তাদেরকে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
যেসব শিশু হাঁটাচলা শুরু করেছে ইংরেজিতে তাদেরকে বলা হয় টডলার। ১ বছর পর থেকে বাচ্চা মূলত সলিড খাবারের উপরে বেশি নির্ভরশীল হয়। তাই লেখার দ্বিতীয়ভাগে থাকছে তাদের নিয়ে আলোচনা। 

তবে সবার আগে জেনে নেয়া দরকার কোষ্ঠকাঠিন‍্যের কোন লক্ষণগুলি দেখলে বাচ্চাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া দরকার।

বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্যের গুরুতর লক্ষণ কী

সাধারণত  ছোট বাচ্চার এক-দুইবার কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাতে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু কিছু কিছু পরিস্থিতিতে ডাক্তার ডাকা প্রয়োজন। যেমন:

  • নবজাতক শিশু (এক মাসের কম বয়েসী) যদি দিনে এক বারেরও কম পায়খানা করে
  • ফরমুলা খায় এমন শিশু যদি অস্বস্তির মধ্যে আছে বলে মনে হয় বা অনেক কান্নাকাটি করে যা সামলাতে কষ্ট হয় এবং তিন দিনে একবারও পায়খানা না করে( যদি পায়খানা করার অভ্যাসে কোনো পরিবর্তন আসে)
  • বুকের দুধ খাওয়া শিশু যদি স্বাভাবিকের থেকে বেশিদিন যাবত পায়খানা না করে 
  • একবছরের বড় শিশু যদি চার বা পাঁচ দিন যাবত পায়খানা না করে। 
  • বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে সাথে যদি তলপেটে ব্যথা বা বমি হয়, কিংবা পায়খানার সাথে যদি রক্ত লেগে থাকে। 
  • ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিছুতেই যদি কোষ্ঠকাঠিন‍্য না সারে। 
  • যদি কোনো কারণে বাচ্চা নিজেই পায়খানা ভেতরে আটকে রাখে।
০-১২ মাস বয়েসী বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্য কী

পায়খানা যখন শক্ত ও শুকনো হয় এবং যখন পায়খানা করতে শিশুর কষ্ট হয় তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় এটা মূলত আমরা সবাই জানি। কিন্তু সবাই যেটা জানে না তা হলো, নবজাতকদের সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য হয়না। ছোট বাচ্চার পায়খানা না হওয়া খুবই স্বাভাবিক। 

১ মাস এবং তার  বেশি বয়েসী বাচ্চা, যারা মায়ের বুকের দুধ খায় তারা কয়েক দিন এমনকি এক সপ্তাহ পর্যন্ত পায়খানা না করাটা স্বাভাবিক। ফরমুলা খাওয়া বাচ্চারা সাধারণত একদিন বা দুইদিন পরপর পায়খানা করে। 

তবে শিশু যখন কিছুটা বড় হয় এবং বেশি পরিমাণে সলিড খাবার খেতে শুরু করে তখন থেকে পায়খানার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে।

শিশুর পায়খানার রঙ, গঠন বা ধরন প্রতিদিন– এমনকি প্রতিবারেই বদলাতে পারে।
আরো পড়ুন: শিশুর পায়খানার কোন রঙের মানে কী?
০-১২ মাস বয়েসী বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ

পায়খানা করার সময় শিশুর চাপ দিতে হলে এবং শিশুর মুখ থেকে গোঙানোর মত আওয়াজ বের হলেই ধরে নেওয়া যাবে না যে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে কারণ শিশুদের স্বাভাবিকভাবে পায়খানা করতেই খুব পরিশ্রম করতে হয়।(শুয়ে শুয়ে পায়খানা করা তো আর সহজ কাজ না)

যেসব লক্ষণ দেখে বোঝা যাবে যে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে :

  • যদি বাচ্চা শক্ত অথবা দানা দানা পায়খানা করে অথবা পায়খানায় যদি রক্ত থাকে 
  • স্বাভাবিকের থেকে বেশি সময় পরপর পায়খানা করলে 
  • পায়খানা করতে চেষ্টা করার সময় কান্নাকাটি করলে অথবা পেট/পিঠ বাঁকিয়ে রাখলে 
  • শিশু বেশি কান্নাকাটি করলে এবং তাকে শান্ত করা কঠিন হলে (fussy)
  • স্বাভাবিকের তুলনায় মুখ থেকে বেশি পরিমাণে লালা ঝরলে
  • পায়খানা করার সময় তাকে দশ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টা করতে বা চাপ দিতে হচ্ছে মনে হলে।
কী কারণে ০-১২ মাস বয়েসী বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়

আবারও মনে রাখতে হবে, কোষ্ঠকাঠিন্য নবজাতকদের হয়না। যদি হয়, তাহলে শিশু সলিড খাবার শুরু করার পরে হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। প্রথমদিকের একটানা তরল খাবারের পর,হঠাৎ করে সলিড খাওয়া শুরুর পর নতুন ধরণের খাবারের সাথে মানিয়ে নিতে শিশুর হজম প্রক্রিয়ার (GI tract) একটু সময় লাগতে পারে যার কারণে সাময়িকভাবে পায়খানার সমস্যা হতে পারে।

যথেষ্ট পরিমাণে না খেলে এক মাসের কম বয়েসী শিশুর ক্ষেত্রেও কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ দেখা যেতে পারে। সে দিনে একবারেরও কম পায়খানা করলে কোষ্ঠকাঠিন‍্য হয়েছে মনে করা যেতে পারে। তাই শিশু আগে যত নিয়মিত পায়খানা করতো তার থেকে কম বার পায়খানা করলে শিশু বিশেষজ্ঞকে জানানো প্রয়োজন।

০-১২ মাস বয়েসী বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন‍্য সমস্যা কাটিয়ে ওঠার অনেকগুলো উপায় আছে। বাচ্চার বয়স এবং শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শের ওপর ভিত্তি করে যে ব্যবস্থাগুলো নিতে পারেন:

  • উচ্চ ফাইবারযুক্ত বা আঁশজাতীয় খাবার দিন।  বাচ্চা যদি বুকের দুধ বা ফরমুলা দুধের পাশাপাশি সলিড খাওয়া শুরু করে তবে খাবার তালিকায় জটিল বা মিক্সড খাবার না রেখে সরল খাবার দিন। দিনে অন্তত দুইবার ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার দেয়ার চেষ্টা করুন। যেমন: পাকা পেঁপে, পাকা আম, সফেদা, ডাল, মটরশুঁটি, প্রুন, এপ্রিকট,পিচ,নাশপাতি ইত্যাদি যোগ করুন।
    বাচ্চাকে যারা খিচুড়ি খাওয়ান, হরেক রকমের ডাল ও সবজি না দিয়ে একটি চাল, যে কোন একটি ডাল (মুগ/মসুর), একটি বা দুইটি সবজি দিয়ে সরল খিচুড়ি রাঁধুন। এরকম খিচুড়ি আট মাস বয়স থেকে শিশুকে দেয়া সবচেয়ে ভালো।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। হজমশক্তি বাড়াতে আরেকটি দারুণ খাবার হলো টক দই।তবে টক দই খাওয়ানোর আগে আপনাকে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।কারণ দই সবার পেটে সহ‍্য নাও হতে পারে। যদি হয়, ৭ মাস থেকে শিশুর নিয়মিত খাবারের তালিকায় টক দই রাখবেন। 
  • কী পরিমাণ পানি/ পানীয় খাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখুন। ছয় মাসের বেশি বয়েসী শিশুর প্রতিদিন  ৪ থেকে ৬ আউন্স পানি খাওয়া উচিত। তাই খেয়াল রাখুন শিশু নিয়মিত পরিমাণমতো পানি খাচ্ছে কিনা। ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন‍্যতা থেকে কোষ্ঠকাঠিন‍্য হতে পারে।  
কোন বয়সী বাচ্চার কতটুকু পানি দরকার
  • শিশুকে নড়াচড়া করাতে হবে। অল্প অল্প হাত,পা আর শরীর নাড়াতে পারে এরকম বাচ্চাকে সারাদিন নড়াচড়া করে খেলার অনেক সুযোগ করে দিন। যদি সে নিজের মত এখনো শরীরে নাড়াতে না পারে তবে পা দিয়ে সাইকেল চালানোর মত করে ব্যায়াম করানো যায় এতে হজম প্রক্রিয়া এবং পায়খানা করা সহজ হয়।
  • ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে ল্যাক্সেটিভ বা কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ খাওয়ানো যাবেনা। শিশুদের ল্যাক্সেটিভ বা কোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ দিতে ডাক্তাররা সাধারণত পরামর্শ দেন না, তাই শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এগুলো ব্যবহার করা উচিত হবেনা।
শিশুর পেটে কৃমি হলে দ্রুত ব‍্যবস্থা নিতে হবে
আরো পড়ুন: শিশুর পেটে কৃমি হলে কী করবো
১২ মাস+ বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য কী?

বাচ্চা যখন সলিড খাবারের ওপরে বেশি নির্ভরশীল হয় তখন তার পায়খানা দেখতে অনেকটাই বড় মানুষের মত হবে। এই বয়েসী বাচ্চারা সাধারণত এক দিনে তিনবার পায়খানা করতে পারে। আবার এক সপ্তাহের তিনবারও করতে পারে। কিন্তু পায়খানা যদি এর চেয়েও কম হয় বা শক্ত কিংবা শুকনো হয় এবং পায়খানা করার সময় যদি বাচ্চা ব্যথা পায় তাহলে হতে পারে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে।

১২ মাস+ বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ

কোষ্ঠকাঠিন্য হলে সাধারণত শিশুর মন ভালো থাকে না।যেসব লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন যে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে :

  • এক সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানা করলে 
  • পায়খানা শক্ত এবং শুকনো হলে 
  • শিশু যদি জানায় যে পায়খানা করতে চেষ্টা করার সময় তার ব্যথা লাগে 
  • দশ মিনিটের বেশি সময় ধরে চেষ্টা করেও পায়খানা করতে না পারলে 
  • যখন পায়খানা করার চেষ্টা করছেনা তখনও যদি বাচ্চা বলে যে তার পেটে ব্যথা করছে
  • পায়খানায় কিংবা টয়লেট পেপারে রক্ত দেখা গেলে
কী কারণে ১২ মাস+ বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়?

বড়দের যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, ছোট বাচ্চারও ঠিক একই কারণে হতে পারে। ফাইবার বা আঁশজাতীয় খাবার যথেষ্ট না খাওয়া,পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা,এবং হাঁটাচলা না করে সারাক্ষণ বসে থাকা- এই সবগুলো কারণেই পায়খানা শক্ত হতে পারে এবং মলত্যাগ করা কঠিন হতে পারে। 

নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হওয়া, কিংবা লম্বা সময় ভ্রমণ কিংবা দৈনন্দিন রুটিন পরিবর্তন হওয়ার কারণেও এমনটা হতে পারে।

গরুর দুধ বেশি পরিমাণে খেলে কিংবা পনির বেশি পরিমাণে খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই যদি দেখেন যে শিশুর পায়খানা শক্ত এবং ফ্যাকাশে রঙের হয়েছে তবে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়ানো কমানো দরকার হতে পারে।

বাচ্চার আচার আচরণও এক্ষেত্রে বেশ বড় প্রভাব ফেলতে পারে। বাচ্চাকে পটি ট্রেইন করানোর চেষ্টা করার সময় বাচ্চা যদি টয়লেটে বসে পায়খানা করতে ভয় পায়, তাহলে সে জোর করে পায়খানা ভেতরে ধরে রাখতে পারে যেটাকে বলা হয় স্টুল উইথহোল্ডিং।এছাড়া পায়খানার রাস্তায় ভাইরাস আক্রমণ  বা ডায়পার থেকে র‍্যাশ হওয়ার কারণে পায়খানা করতে ব্যথা পেলেও বাচ্চা পায়খানা করতে চায় না।

১২ মাস+ বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়

বড়দের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যেসব পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ঠিক একই পদ্ধতি বাচ্চার ক্ষেত্রেও কাজ করে।

  • উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে।ফাইবার মলকে নরম এবং ভারী করে ফলে পায়খানা করা সহজ হয়। বাচ্চার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করতে নতুন নতুন আঁশযুক্ত খাবার যেমন ফলমূল,শাকসবজি, শস্যদানা, মটরশুঁটি ইত্যাদি খুঁজে বের করুন। যেমন: পাকা পেঁপে, পাকা আম, সফেদা, ডাল, মটরশুঁটি, প্রুন, এপ্রিকট, পিচ, নাশপাতি কিংবা পালং শাক। 
  • যেসব খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার জন্য দায়ী সেগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যেসব খাবারে আয়রন বেশি সেগুলি খেলে কোষ্ঠকাঠিন‍্য হতে পারে। কিন্তু আয়রন খুবই প্রয়োজনীয় খাবার। তাই আয়রন জাতীয় খাবারের পরিমাণ সঠিক রাখা এবং সঙ্গে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেলে আয়রন হজম করা সহজ হয়। 
বাচ্চার জন‍্য আয়রন বেশ জরুরি
আরো পড়ুন: আয়রন কোন বয়সে কতটুকু দরকার?
  • দুধ জাতীয় খাবার,পরিশোধিত শস্য (যেমন সাদা ভাত এবং পাস্তা), প্রক্রিয়াজাত হালকা খাবার (যেমন বিস্কিট বা চিপস্), কিছু ফলমূল যেমন কাঁচকলা, আপেল এবং গাজর, এসব খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।শিশুর পায়খানা আবার স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত ডাক্তার এসব খাবার কম খেতে বলতে পারে বা খেতে নিষেধ করতে পারে। মনে রাখবেন একেক শিশুর হজম ক্ষমতা একেকরকম। বাচ্চাকে কোনো খাবার খাওয়ানোর পরে যদি হজমে সমস‍্যা দেখেন তাহলে সেটা কম দেয়াই ভালো।
  • পানি পান করার পরিমাণ খেয়াল রাখতে হবে। বাচ্চার দিনে অন্তত চার কাপ পরিমাণ পানি পান করা উচিত,তাই শিশু এই পরিমাণ পানি পান করছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অল্প পরিমাণে প্রুন বা নাশপাতি জুস খাওয়ানো যায়। তবে জুস না দিয়ে সরাসরি ফল/পিওরি খাওয়ানোই ভালো।
  • শিশুকে শারীরিকভাবে সক্রিয় খেলায় অংশগ্রহণ করাতে হবে। নড়াচড়া, হাঁটাচলা এবং দৌড়ঝাঁপ করে খেলাধূলা করলে হজম প্রক্রিয়া সচল থাকে। মাঠে গিয়ে লাফালাফি, দৌড়াদৌড়ি করা যায়,কিংবা ঘরেই বাচ্চাকে নিয়ে নাচানাচি করা যায় কিংবা বাচ্চার ইয়োগা ক্লাসে নিয়ে যাওয়া যায়।
কাপড় এলোমেলো করলে রাগ না হয়ে বরং খেলুন
আরো পড়ুন: শিশুর খেলা কোন বয়সে কেমন
  • পটি ট্রেনিং সাময়িকভাবে  বন্ধ রাখতে পারেন। পটি ট্রেনিং করাতে গিয়ে অবস্থা যদি বেশি খারাপ হয় তাহলে কয়েক সপ্তাহের জন্য পটি ট্রেনিং বন্ধ রাখার কথা ভেবে দেখতে পারেন।
  • প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার দিন।টকদই ছোটবড় সবার জন‍্য বেশ স্বাস্থ‍্যকর খাবার। বাচ্চার খাবার তালিকায় প্রতিদিন এক চামচ হলেও টক দই রাখুন।
  • লুব্রিকেশন( পিচ্ছিকারক পদার্থ) ব্যবহার করা যায়। শিশুর মলদ্বারে ভ্যাসলিন বা পেট্রোলিয়াম জেলির মতো কিছুটা পিচ্ছিলকারক পদার্থ মালিশ করে দিলে মলত্যাগ অনেক সময় সহজ হয়।
  • ডাক্তারের কাছে OTC মেডিসিনের (over the counter বা প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ) বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া যায়। কিছু ওষুধ আছে যেগুলো আমেরিকান শিশু একাডেমি (AAP) শিশুদের জন্য নিরাপদ মনে করে যেমন পায়খানা নরম করার ওষুধ (যেমন  ডকুসেট সোডিয়াম ); অসমোটিক ল্যাক্সেটিভ ( যেমন ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড, ম্যাগনেসিয়াম সাইট্রেট, অথবা পলি-ইথিলিন গ্লাইকল ৩৩৫০ ৩৩৫০); অথবা স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভস (যেমন সেনোকোট)
    জীবন যাপনের পদ্ধতি বা খাবার তালিকায় পরিবর্তন এনেও যদি কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো না হয় সেক্ষেত্রে এই ওষুধগুলো সাহায্য করতে পারে।তবে মল নরম করার ওষুধ বা ল্যাক্সেটিভ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই শিশুর ডাক্তারের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে ওষুধ ব্যবহার করা ঠিক সিদ্ধান্ত হবে কিনা।

বাবা-মা বা শিশু সবার জন্যই কোষ্ঠকাঠিন্য বেশ কষ্টের অভিজ্ঞতা।বেশিরভাগ সময় ঘরে বসেই এই সমস্যার সমাধান করা যায়। তাই যত বেশি সম্ভব শিশুকে ফাইবার বা আঁশ সমৃদ্ধ খাবার এবং পানি পান করাতে হবে।শারীরিক কসরত করাতে হবে এবং সেই সাথে ধৈর্য‍্য ধরতে হবে।



রেফারেন্স: 

  1. American Academy of Pediatrics, How Can I Tell If My Baby is Constipated? 
  2. National Library of Medicine, MedlinePlus, Constipation in infants and children 
  3. American Academy of Pediatrics, Constipation 
  4. American Academy of Pediatrics, Constipation in Children 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *